কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ববিষয়ক দপ্তরের (আইআরসিসি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আসার হার আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নতুন স্টাডি পারমিট ইস্যুর সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা দেশটির শিক্ষা খাতে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
আইআরসিসির তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সময়ে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা কমে মাত্র ৩৬ হাজার ৪১৭-তে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে ৮৮ হাজার ৬১৭ জন কম শিক্ষার্থী কানাডায় পড়ার অনুমতি পেয়েছেন। এই হ্রাসের প্রবণতা মার্চ মাসে ছিল সবচেয়ে বেশি; যেখানে ২০২৩ সালের মার্চে ১৬ হাজার ৮৭৫টি পারমিট ইস্যু করা হয়েছিল, সেখানে ২০২৪ সালের মার্চে তা নেমে আসে মাত্র ৩ হাজার ৮১৯-এ।
কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে এই সংখ্যা কমানোর বিষয়টিকে একটি পরিকল্পিত নীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত আবাসন সংকট মোকাবিলা এবং অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে একটি টেকসই পর্যায়ে নিয়ে আসতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি অস্থায়ী বিদেশি কর্মী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আইআরসিসির ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে, “আমরা কানাডায় আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা টেকসই পর্যায়ে নামিয়ে আনছি।”
সরকারি এই নীতির প্রত্যক্ষ প্রভাব এরই মধ্যে কানাডার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পড়তে শুরু করেছে। সম্প্রতি ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে ব্যাপক ঘাটতির কারণে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে, যা সংকটের গভীরতাকে তুলে ধরেছে।
শুধু স্টাডি পারমিটই নয়, অস্থায়ী বিদেশি কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ইস্যুর সংখ্যাও প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০২৪ সালের একই সময়ে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু ৫১ শতাংশ কমেছে, যা সরকারের সার্বিক অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নীতিরই প্রতিফলন।

