যেনো শখের মাছ ধরার কাছেই জীবনের শেষ সময়টুকু দিয়ে গেলেন তিনি। কানাডার ব্রিট্রিশ কলাম্বিয়ায় ভারী বৃষ্টির প্রবল স্রোতে ভেসে, চলে গেলেন অতল গন্তব্যে। বাংলাদেশি-কানাডিয়ান বিজ্ঞানী ও ফার্মেসি গবেষক ড. সাদাত রবিন। মাত্র ৪১ বছরেই পৃথিবীর মায়া ছাড়লেন হাহাকার জাগিয়ে।
বিসি’র ভ্যাঙ্কুভার থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত চিলিওয়াক শহরের পাশেই এই মর্মান্তিক বিদায়ের ঘটনা ঘটে।
গত শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টা দিকে, ভেডার নদীর ক্যাম্পগ্রাউন্ড রিজার্ভ এলাকার কাছাকাছি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এক বিবৃতিতে চিলিওয়াক পুলিশ জানায়, ‘তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে তীরে আনা হয়।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সম্প্রতি ভারী বৃষ্টির কারণে নদীর পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে এবং স্রোতের গতি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। নাগরিকদের আমরা সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
চিলিওয়াক ফায়ার ডিপার্টমেন্ট, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম, বিসি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ও আরসিএমপি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ড্রোন, নৌকা ও হেলিকপ্টারের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান চালায়। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর সকাল প্রায় ১০টার দিকে রেল ব্রিজের কাছে ভেডার নদী থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়।
সবুজ উপত্যকায় ভরা চিলিওয়াক শহরটি ফ্রেজার ভ্যালির হৃদয় বলে পরিচিত। এখানেই মাছ ধরতে আসেন মাছশিকারী পর্যটকরা। কিন্তু কিছুদিন আগের বৃষ্টি এই নদীকে খরস্রোতা করে রেখেছে অনেকদিন ধরেই। সেই স্রোতের প্রবল টানেই চিরবিদায় নিলেন বাংলাদেশি-কানাডিয়ান বিজ্ঞানী ও ফার্মেসি গবেষক ড. রবিন।
ড. সাদাত রবিন ছিলেন কানাডিয়ান ফার্মেসি গবেষণা জগতের এক উজ্জ্বল প্রতিভা। তিনি একাধিক আন্তর্জাতিক scholarship, fellowship, Ph.D., postdoc ও patent অর্জন করেছিলেন।
ভ্যাঙ্কুভারপ্রবাসী গবেষক ড. মো. আবু আলী খান তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে লিখেছেন, “ফার্মেসি জগতের আলোকিত আইকন ড. সাদাত অকালে ঝরে গেলেন মাছ ধরার শখের কাছে হেরে গিয়ে। রবিনের মধ্যে মেধা, মানবতা ও আচরণের এক অপূর্ব সমন্বয় ছিল।”
বাংলাদেশ কমিউনিটিতে ড. সাদাত রবিন ছিলেন অনুকরণীয় এক নাম। তাঁর স্ত্রী মৌসুমি-ও একজন ফার্মাসিস্ট। রবিনের অকাল বিদায়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কমিউনিটি জুড়ে।
এই অযাচিত শোকের ভেতরেই চিলিওয়াক পুলিশ রবিনের মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছে।

