চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী রাজনীতিক মারিয়া কোরিনা মাচাদো। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে নোবেল কমিটি এ ঘোষণা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছর শান্তিতে নোবেল পাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখালেও, শেষ পর্যন্ত কমিটি এই পুরস্কার দেয় গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে নিরলস সংগ্রাম করে যাওয়া মারিয়া কোরিনাকে।
নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য” এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে মারিয়াকে। তারা বলেন, “গভীর বিভাজনে জর্জরিত দেশটির বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি।”
একসময় সমৃদ্ধ ভেনেজুয়েলা এখন ভয়াবহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত। বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন, মিথ্যা মামলা ও কারাদণ্ডে প্রায় ৮০ লাখ নাগরিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এই অবস্থায়ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন মারিয়া কোরিনা।
তার বিখ্যাত বক্তব্য— “বুলেট নয়, আমরা ব্যালটকেই বেছে নিয়েছি”— দেশজুড়ে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের স্লোগানে পরিণত হয়। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বছরজুড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন মারিয়া। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। এরপরও তিনি ভিন্ন দলের প্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেজ উররুটিয়াকে সমর্থন দেন এবং ঐক্যের প্রতীক হিসেবে নেতৃত্ব অব্যাহত রাখেন।
নোবেল কমিটি বলেছে, “তার সাহস, ধৈর্য এবং অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি শুধু ভেনেজুয়েলাতেই নয়, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।”
এ বছর শান্তিতে নোবেলের জন্য ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়ে, যার মধ্যে ২৪৪ জন ব্যক্তি এবং ৯৪টি প্রতিষ্ঠান। গত বছর এ পুরস্কার পেয়েছিল জাপানের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ সংগঠন নিহন হিদানকিও।

