সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন ‘সরকারি ক্রয়বিধিমালা, ২০২৫’ কার্যকর করা হয়েছে। এই বিধিমালার আওতায় এখন থেকে সব ধরনের সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন দরপত্র বা ই-জিপি বাধ্যতামূলক করা হলো। গত রোববার নতুন এই বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত হওয়ার মাধ্যমে এটি কার্যকর হয়।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষের (বিপিপিএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৬ সালের সরকারি ক্রয় আইনের (পিপিএ) সংশোধনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
নতুন বিধিমালায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ কেনাকাটার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ মূল্যসীমা বাতিল এবং চুক্তি পাওয়ার জন্য প্রকৃত উপকারভোগীর (বেনিফিশিয়ারি ওনারশিপ) তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা। একইসঙ্গে প্রতিটি কেনাকাটার জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা প্রস্তুত এবং টেকসই ক্রয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
১৫৪টি বিধি ও ২১টি তফসিল সম্বলিত এই বিধিমালায় ভৌত সেবাকে একটি স্বতন্ত্র প্রকিউরমেন্ট ক্যাটাগরি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাঠামো চুক্তির (ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট) ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং কেনাকাটার পরিকল্পনা বাতিলের জন্য একটি ‘ডেবারমেন্ট বোর্ড’ গঠনের কথাও বলা হয়েছে।
বিপিপিএ জানায়, নতুন বিধিমালা তৈরির আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বড় ক্রয়কারী সংস্থা, দরদাতা, সাংবাদিক ও নারী উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ১২টি সভা করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মতামতের ভিত্তিতেই পুরোনো বিধিমালা সংশোধন না করে সম্পূর্ণ নতুন বিধিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়।
বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ এক বিবৃতিতে বলেন, “নতুন বিধিমালা দেশের সরকারি কেনাকাটা সংস্কারের ইতিহাসে একটি মাইলফলক।”
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “নতুন এই বিধিমালা সরকারি কেনাকাটার প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।”

