হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। কানাডার মতো একটি বহু সংস্কৃতির দেশে বসবাসরত বাংলাদেশীরা প্রতিনিয়ত শেকড়ের টান অনুভব করেন। এই টান এবং প্রবাসের নতুন জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছেন একদল নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক, ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। তাদের লেখনী, বিশ্লেষণ এবং সংবাদের মাধ্যমে কানাডার বাংলাদেশী কমিউনিটি কেবল সংগঠিতই থাকছে না, বরং নিজেদের পরিচয় এবং সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
সুদূর প্রবাসে দেশের খবর জানার জন্য যেমন মন কাঁদে, তেমনি কানাডার স্থানীয় কমিউনিটির খবর, ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত নতুন নিয়মকানুন এবং সাফল্যগাঁথাগুলোও জানা জরুরি। এই প্রয়োজনীয়তা থেকেই কানাডায় গড়ে উঠেছে বেশ কিছু বাংলা অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং সক্রিয় হয়েছেন অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা।
এই ক্ষেত্রে যে নামটি সবার আগে আসে, তিনি হলেন সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর। টরন্টোতে বসবাসরত এই অভিজ্ঞ সাংবাদিক কানাডার বাংলাদেশী কমিউনিটির একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। তার সম্পাদিত নিউজ পোর্টাল ‘নতুন দেশ’ (Notun Desh) কানাডার বাংলাদেশীদের জন্য অন্যতম নির্ভরযোগ্য একটি তথ্যসূত্র। কমিউনিটির বিভিন্ন সংবাদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এবং ইমিগ্রেশন বিষয়ক তথ্যের জন্য পোর্টালটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত। শওগাত আলী সাগরের বস্তুনিষ্ঠ লেখনী এবং কমিউনিটির প্রতি তার দায়বদ্ধতা তাকে প্রবাসী সাংবাদিকদের একজন আইকনে পরিণত করেছে।
শুধু ‘নতুন দেশ’ নয়, কানাডায় আরও বেশ কিছু নিউজ পোর্টাল সক্রিয়ভাবে কমিউনিটির সেবা করে যাচ্ছে। এর মধ্যে সিবিএনএ২৪ (CBNA24), বাংলা মেইল (Bangla Mail Canada), এবং প্রবাস বাংলা ভয়েস (Probash Bangla Voice) উল্লেখযোগ্য। এই পোর্টালগুলো স্থানীয় অনুষ্ঠানের খবর, নতুন অভিবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, ব্যবসায়িক উদ্যোগ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সংবাদ পরিবেশন করে কমিউনিটিকে সংযুক্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই সাংবাদিক এবং ব্লগাররা কেবল সংবাদ পরিবেশনই করেন না, তারা কানাডার মূলধারার রাজনীতির সাথে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে যুক্ত করার চেষ্টাও করেন। ফেডারেল বা প্রভিন্সিয়াল নির্বাচনের সময় তাদের বিশ্লেষণ এবং রিপোর্টিং কমিউনিটির সদস্যদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
পরিশেষে বলা যায়, কানাডার এই বাংলাদেশী ব্লগার ও সাংবাদিকরা হলেন একেকজন ডিজিটাল মুক্তিযোদ্ধা। তারা ভাষার প্রতি ভালোবাসা এবং দেশের প্রতি মমত্ববোধ থেকে নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের হাত ধরেই কানাডার মতো দূর দেশেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি স্বমহিমায় টিকে আছে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ছে। তারাই সত্যিকারের প্রতিধ্বনি, যারা কানাডার বুকে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

